ভিক্টোরিয়া র ভেতরে ঢুকলেই প্রথম ডান হাতে পড়বে রোয়াল্ড গ্যালারি। যেখানে রয়েছে বিশাল বিশাল তৈলচিত্র যেগুলো এত নিখুতভাবে আঁকা হয়েছে যে এখনকার দিনে বড় বড় শিল্পীদের ও আঁকতে কঠিন লাগবে। যতগুলো তৈলচিত্র ওখানে সুরক্ষিত আছে সব গুলোই প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে করা কারণ তখনকার দিনে কৃত্রিম রঙ ছিল ই না। এগুলো সব থমাস ও উইলিয়াম ডেনিয়াল নামক দুই ইংরেজদের তৈরী। রয়াল গ্যালারি র ঠিক উল্টোদিকে রয়েছে চিত্র গ্যালারি যেখানে তৈলচিত্রের সাথে সাথে দেখতে পাওয়া যায় কিছু জলরঙের চিত্র। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অবনিন্দ্র নাথ ঠাকুরের তৈরী কিছু জলরঙের চিত্রচিত্র যেগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। এছাড়াও তখনকার দিনের তিনজন গভর্নর জেনারেলের মূর্তি ও দেখতে পাওয়া যায় এই গ্যালারি তে। মার্কস হেস্টিংস, মার্কস ডালহৌসি ও মার্কস ওলেসলি যাদের নামে কোলকাতায় রাস্তা আছে। এই দুটি গ্যালারির সাথে সাথে রয়েছে আরো দুটো গ্যালারি নাম কোলকাতা গ্যালারি ও দরবার হল যেগুলো সেন্ট্রাল হল পেরোলেই চোখে পড়বে। প্রথম বাঁ দিকে আছে দরবার হল যেখানে রাখা আছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মডেলটি। আর আছে মোঘল সম্রাট সাহ আলমের কিছু তৈলচিত্র, আউদের নবাব সুজাউদ্দৌলা র কিছু তৈলচিত্র, দিল্লির জুমা মসজিদ, সুলতানগঞ্জের ফকির রকের চিত্র, বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার তথা নাজিবের নবাব যেই সিংহাসনে বসতেন সেটিও সযত্নে রাখা আছে এই দরবার হলে। সত্যিই, বাংলা ও ভারতের ইতিহাসের কত কি নিদর্শন সংরক্ষিত আছে এই স্মৃতি শৈলের অন্দরে সেটা না দেখলে বোঝানো মুশকিল। এই সংগ্ৰহ শালা সত্যি দেখার মত। দরবার হলের ঠিক উল্টোদিকে হলো কোলকাতা গ্যালারি যেখানে রয়েছে বাংলার সব বিখ্যাত মানুষের ছবি, তাদের নিজেদের হাতে লেখা অনেক তথ্য, তাদের জীবন, রয়েছে বাংলা প্রথম হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের মূর্তি, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল দত্তযাঁকে কোলকাতার ফাদার ওফ হোমিওপ্যাথি ও বলা হয়ে থাকে। তাছাড়াও রয়েছে হাতির দাঁতের তৈরি চেয়ার যেটি মীর জাফারের স্ত্রী মুন্নী বেগম উপহার দিয়েছিলেন হেস্টিংসের স্ত্রীকে। রয়েছে ১৮৯১ সালের কাঁথা যেটার ওপর সুতোর কাজ এত নিঁখুত যে এখনকার দিনে মেশিনে করলেও এত ভাল করে করতে পারবে না। এছাড়াও আছে সত্যেন্দ্র প্রসন্ন সিনহার পরিহিত কোট যার মধ্যে রয়েছে সোনার অসম্ভব সুন্দর কাজ। এই সংগ্ৰহ শালা দেখতে দেখতে সারাদিন কাটানো যায়।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সেন্ট্রাল হলে রাণীর মূর্তি তো আছেই তার সাথে ওপরে তাকালে দেখতে পাবেন অনেক ছবি। রাণীর শৈশব কাল, তাঁর সাথে প্রিন্স এলবার্টের বিবাহ, রাজকীয় পরিবারের জীবনযাপন, এডওয়ার্ড সিক্স এবং প্রিন্সেস আলেকজান্ডারের বিবাহ এসবের ছবিতে বলা আছে। ভিক্টোরিয়ার সংগ্ৰহশালায় যেসব তৈলচিত্র টাঙানো আছে সেগুলো সব ই ১৭৭০ থেকে ১৮৩৫ এর মধ্যে তৈরী হয়েছে। ভু দৃশ্য ও শহরের দৃশ্যের যে চিত্র গুলো আছে ওগুলো সরকার উলিয়াম ও থমাস ডেনিয়েলের তৈরী। প্রতি কৃতি, পোট্রেট এবং ঐতিহাসিক দৃশ্যে র যে চিত্র গুলো সব টিটি কেটেল নামক এক ইংরেজের তৈরী। এই শৈল স্মৃতি র বাইরে যে সবুজে ঘেরা বাগান আছে সেটা প্রায় ৬৪ একর জমির ওপর করা হয়েছে। ২১টি মালি এই বাগানগুলোর পরিচর্যা করে। রিডেলসল ও ডেভিড নামক দুই ইংরেজ এই বা বাগানগুলোর নকসা করেছেন। এই বাগানের চারিধারে কিছু মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে যেগুলো হল চার্লস কর্ন ওয়ালিস, জেমস ব্রাউন রামসে, আর্থার ওয়েলেসলি র।
ভিক্টোরিয়া র বাইরে টাও যেমন সুন্দর ভেতরের সংগ্ৰহ শালা ততধিক আকর্ষণীয়। তাই আমাদের সবার ই দ্বায়িত্ব এই স্মৃতি শৈলকে সারাজীবন এভাবেই সুন্দরভাবে কোলকাতার ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখতে।ইংরেজরা কোলকাতার বুকে ২০০ বছর রাজত্বকালে কত না স্বাধীনতা সংগ্রামী দের ওপর অত্যাচার করেছে। কত প্রাণ বলিদান গেছে এই ইংরেজ শাসকদের জন্যে। কিন্তু এটাও ঠিক যে এই ইংরেজরা আমাদের শহরের বুকে এমন সব গির্জা বা স্মৃতি শৈল স্থাপন করেছেন যেগুলো এখনো সেই একই সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের এত বছরেও সেই জৌলুস কিছুটা ঘাটতি হলেও তারা কিন্তু তাদের ঐতিহ্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলো এমন এক অতীব সুন্দর নিদর্শন যা বার বার দর্শন করলেও মন ভরে না। সারা বছর বাঙালী সহ সারা বিশ্বেরকোটি কোটি পর্যটকেরা আসেন এই শৈল স্মৃতি দেখতে। বিশেষত লণ্ডনে র প্রচুর পর্যটকরা ভিড় জমায় ভিক্টোরিয়া র সংগ্ৰহ শালা দেখতে কারণ এখানের সংগ্ৰহ শালা য় এমন সব দুষ্প্রাপ্য জিনিস রাখা আছে যেটা লণ্ডনে র সংগ্ৰহ শালা য় ও নেই। তার মধ্যে একটি হলো রাণী ভিক্টোরিয়ার ব্যবহার করা পিয়ানো যেটা তাঁর বর প্রিন্স এলবার্ট তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। সেটা একমাত্র কোলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল রাখা আছে। এই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রবেশ করলেই সামনে ডান দিকে দেখা যাবে রাজা জর্জ সিক্স এবং বাঁ দিকে মাদার মেরীর মূর্তি। নাক বরাবর গেলে পড়বে বিশাল সেন্ট্রাল হল যেখানে রয়েছে সাদা পাথর বা হোয়াইট স্টোনে নির্মিত রাণী ভিক্টোরিয়ার মূর্তি। তার তলায় রয়েছে দুটো তারিখ যেটা তার রাজত্বকাল বোঝাচ্ছে। উনি ১৮০৭-১৯০১ সাল অবধি রাজত্ব করেছিলেন। এই রাণীর রাজত্বকালে র স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই স্মৃতি শৈল তৈরী করা হয়েছে। ১৯০১ সালের জানুয়ারি মাসে রাণীর মৃত্যু হয়। ১৯০৬ সালে এই ভিক্টোরিয়া র তৈরী করা শুরু হয়। জর্জ সিক্স প্রথম ভিত তা স্থাপন করেন এবং উলিয়মস এডিসন নামক একজন ইংরেজ যিনি তাজ মহলের বড় ই ভক্ত ছিলেন তিনি সেই তাজ মহলের আদলে তৈরী করলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মডেলটি যেটি হিন্দু, মুসলিম এবং ইউরোপিয়ান আর্টের কিছু বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণ হিসেবে তৈরী করা হয়। এই মডেলটি ভিক্টোরিয়া র ভেতরে সযত্নে সংরক্ষিত আছে। ১৯২১ সালে এটি সাধারণ মানুষের জন্যে খুলে দেওয়া হয়।
ভিক্টোরিয়া র ভেতরে ঢুকলেই প্রথম ডান হাতে পড়বে রোয়াল্ড গ্যালারি। যেখানে রয়েছে বিশাল বিশাল তৈলচিত্র যেগুলো এত নিখুতভাবে আঁকা হয়েছে যে এখনকার দিনে বড় বড় শিল্পীদের ও আঁকতে কঠিন লাগবে। যতগুলো তৈলচিত্র ওখানে সুরক্ষিত আছে সব গুলোই প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে করা কারণ তখনকার দিনে কৃত্রিম রঙ ছিল ই না। এগুলো সব থমাস ও উইলিয়াম ডেনিয়াল নামক দুই ইংরেজদের তৈরী। রয়াল গ্যালারি র ঠিক উল্টোদিকে রয়েছে চিত্র গ্যালারি যেখানে তৈলচিত্রের সাথে সাথে দেখতে পাওয়া যায় কিছু জলরঙের চিত্র। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অবনিন্দ্র নাথ ঠাকুরের তৈরী কিছু জলরঙের চিত্রচিত্র যেগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। এছাড়াও তখনকার দিনের তিনজন গভর্নর জেনারেলের মূর্তি ও দেখতে পাওয়া যায় এই গ্যালারি তে। মার্কস হেস্টিংস, মার্কস ডালহৌসি ও মার্কস ওলেসলি যাদের নামে কোলকাতায় রাস্তা আছে। এই দুটি গ্যালারির সাথে সাথে রয়েছে আরো দুটো গ্যালারি নাম কোলকাতা গ্যালারি ও দরবার হল যেগুলো সেন্ট্রাল হল পেরোলেই চোখে পড়বে। প্রথম বাঁ দিকে আছে দরবার হল যেখানে রাখা আছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মডেলটি। আর আছে মোঘল সম্রাট সাহ আলমের কিছু তৈলচিত্র, আউদের নবাব সুজাউদ্দৌলা র কিছু তৈলচিত্র, দিল্লির জুমা মসজিদ, সুলতানগঞ্জের ফকির রকের চিত্র, বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার তথা নাজিবের নবাব যেই সিংহাসনে বসতেন সেটিও সযত্নে রাখা আছে এই দরবার হলে। সত্যিই, বাংলা ও ভারতের ইতিহাসের কত কি নিদর্শন সংরক্ষিত আছে এই স্মৃতি শৈলের অন্দরে সেটা না দেখলে বোঝানো মুশকিল। এই সংগ্ৰহ শালা সত্যি দেখার মত। দরবার হলের ঠিক উল্টোদিকে হলো কোলকাতা গ্যালারি যেখানে রয়েছে বাংলার সব বিখ্যাত মানুষের ছবি, তাদের নিজেদের হাতে লেখা অনেক তথ্য, তাদের জীবন, রয়েছে বাংলা প্রথম হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের মূর্তি, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল দত্ত যাঁকে কোলকাতার ফাদার ওফ হোমিওপ্যাথি ও বলা হয়ে থাকে। তাছাড়াও রয়েছে হাতির দাঁতের তৈরি চেয়ার যেটি মীর জাফারের স্ত্রী মুন্নী বেগম উপহার দিয়েছিলেন হেস্টিংসের স্ত্রীকে। রয়েছে ১৮৯১ সালের কাঁথা যেটার ওপর সুতোর কাজ এত নিঁখুত যে এখনকার দিনে মেশিনে করলেও এত ভাল করে করতে পারবে না। এছাড়াও আছে সত্যেন্দ্র প্রসন্ন সিনহার পরিহিত কোট যার মধ্যে রয়েছে সোনার অসম্ভব সুন্দর কাজ। এই সংগ্ৰহ শালা দেখতে দেখতে সারাদিন কাটানো যায়।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সেন্ট্রাল হলে রাণীর মূর্তি তো আছেই তার সাথে ওপরে তাকালে দেখতে পাবেন অনেক ছবি। রাণীর শৈশব কাল, তাঁর সাথে প্রিন্স এলবার্টের বিবাহ, রাজকীয় পরিবারের জীবনযাপন, এডওয়ার্ড সিক্স এবং প্রিন্সেস আলেকজান্ডারের বিবাহ এসবের ছবিতে বলা আছে। ভিক্টোরিয়ার সংগ্ৰহশালায় যেসব তৈলচিত্র টাঙানো আছে সেগুলো সব ই ১৭৭০ থেকে ১৮৩৫ এর মধ্যে তৈরী হয়েছে। ভু দৃশ্য ও শহরের দৃশ্যের যে চিত্র গুলো আছে ওগুলো সরকার উলিয়াম ও থমাস ডেনিয়েলের তৈরী। প্রতি কৃতি, পোট্রেট এবং ঐতিহাসিক দৃশ্যে র যে চিত্র গুলো সব টিটি কেটেল নামক এক ইংরেজের তৈরী। এই শৈল স্মৃতি র বাইরে যে সবুজে ঘেরা বাগান আছে সেটা প্রায় ৬৪ একর জমির ওপর করা হয়েছে। ২১টি মালি এই বাগানগুলোর পরিচর্যা করে। রিডেলসল ও ডেভিড নামক দুই ইংরেজ এই বা বাগানগুলোর নকসা করেছেন। এই বাগানের চারিধারে কিছু মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে যেগুলো হল চার্লস কর্ন ওয়ালিস, জেমস ব্রাউন রামসে, আর্থার ওয়েলেসলি র।
ভিক্টোরিয়া র বাইরে টাও যেমন সুন্দর ভেতরের সংগ্ৰহ শালা ততধিক আকর্ষণীয়। তাই আমাদের সবার ই দ্বায়িত্ব এই স্মৃতি শৈলকে সারাজীবন এভাবেই সুন্দরভাবে কোলকাতার ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখতে।ইংরেজরা কোলকাতার বুকে ২০০ বছর রাজত্বকালে কত না স্বাধীনতা সংগ্রামী দের ওপর অত্যাচার করেছে। কত প্রাণ বলিদান গেছে এই ইংরেজ শাসকদের জন্যে। কিন্তু এটাও ঠিক যে এই ইংরেজরা আমাদের শহরের বুকে এমন সব গির্জা বা স্মৃতি শৈল স্থাপন করেছেন যেগুলো এখনো সেই একই সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের এত বছরেও সেই জৌলুস কিছুটা ঘাটতি হলেও তারা কিন্তু তাদের ঐতিহ্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলো এমন এক অতীব সুন্দর নিদর্শন যা বার বার দর্শন করলেও মন ভরে না। সারা বছর বাঙালী সহ সারা বিশ্বেরকোটি কোটি পর্যটকেরা আসেন এই শৈল স্মৃতি দেখতে। বিশেষত লণ্ডনে র প্রচুর পর্যটকরা ভিড় জমায় ভিক্টোরিয়া র সংগ্ৰহ শালা দেখতে কারণ এখানের সংগ্ৰহ শালা য় এমন সব দুষ্প্রাপ্য জিনিস রাখা আছে যেটা লণ্ডনে র সংগ্ৰহ শালা য় ও নেই। তার মধ্যে একটি হলো রাণী ভিক্টোরিয়ার ব্যবহার করা পিয়ানো যেটা তাঁর বর প্রিন্স এলবার্ট তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। সেটা একমাত্র কোলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল রাখা আছে। এই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রবেশ করলেই সামনে ডান দিকে দেখা যাবে রাজা জর্জ সিক্স এবং বাঁ দিকে মাদার মেরীর মূর্তি। নাক বরাবর গেলে পড়বে বিশাল সেন্ট্রাল হল যেখানে রয়েছে সাদা পাথর বা হোয়াইট স্টোনে নির্মিত রাণী ভিক্টোরিয়ার মূর্তি। তার তলায় রয়েছে দুটো তারিখ যেটা তার রাজত্বকাল বোঝাচ্ছে। উনি ১৮০৭-১৯০১ সাল অবধি রাজত্ব করেছিলেন। এই রাণীর রাজত্বকালে র স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই স্মৃতি শৈল তৈরী করা হয়েছে। ১৯০১ সালের জানুয়ারি মাসে রাণীর মৃত্যু হয়। ১৯০৬ সালে এই ভিক্টোরিয়া র তৈরী করা শুরু হয়। জর্জ সিক্স প্রথম ভিত তা স্থাপন করেন এবং উলিয়মস এডিসন নামক একজন ইংরেজ যিনি তাজ মহলের বড় ই ভক্ত ছিলেন তিনি সেই তাজ মহলের আদলে তৈরী করলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মডেলটি যেটি হিন্দু, মুসলিম এবং ইউরোপিয়ান আর্টের কিছু বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণ হিসেবে তৈরী করা হয়। এই মডেলটি ভিক্টোরিয়া র ভেতরে সযত্নে সংরক্ষিত আছে। ১৯২১ সালে এটি সাধারণ মানুষের জন্যে খুলে দেওয়া হয়।
ভিক্টোরিয়া র ভেতরে ঢুকলেই প্রথম ডান হাতে পড়বে রোয়াল্ড গ্যালারি। যেখানে রয়েছে বিশাল বিশাল তৈলচিত্র যেগুলো এত নিখুতভাবে আঁকা হয়েছে যে এখনকার দিনে বড় বড় শিল্পীদের ও আঁকতে কঠিন লাগবে। যতগুলো তৈলচিত্র ওখানে সুরক্ষিত আছে সব গুলোই প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে করা কারণ তখনকার দিনে কৃত্রিম রঙ ছিল ই না। এগুলো সব থমাস ও উইলিয়াম ডেনিয়াল নামক দুই ইংরেজদের তৈরী। রয়াল গ্যালারি র ঠিক উল্টোদিকে রয়েছে চিত্র গ্যালারি যেখানে তৈলচিত্রের সাথে সাথে দেখতে পাওয়া যায় কিছু জলরঙের চিত্র। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অবনিন্দ্র নাথ ঠাকুরের তৈরী কিছু জলরঙের চিত্রচিত্র যেগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। এছাড়াও তখনকার দিনের তিনজন গভর্নর জেনারেলের মূর্তি ও দেখতে পাওয়া যায় এই গ্যালারি তে। মার্কস হেস্টিংস, মার্কস ডালহৌসি ও মার্কস ওলেসলি যাদের নামে কোলকাতায় রাস্তা আছে। এই দুটি গ্যালারির সাথে সাথে রয়েছে আরো দুটো গ্যালারি নাম কোলকাতা গ্যালারি ও দরবার হল যেগুলো সেন্ট্রাল হল পেরোলেই চোখে পড়বে। প্রথম বাঁ দিকে আছে দরবার হল যেখানে রাখা আছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মডেলটি। আর আছে মোঘল সম্রাট সাহ আলমের কিছু তৈলচিত্র, আউদের নবাব সুজাউদ্দৌলা র কিছু তৈলচিত্র, দিল্লির জুমা মসজিদ, সুলতানগঞ্জের ফকির রকের চিত্র, বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার তথা নাজিবের নবাব যেই সিংহাসনে বসতেন সেটিও সযত্নে রাখা আছে এই দরবার হলে। সত্যিই, বাংলা ও ভারতের ইতিহাসের কত কি নিদর্শন সংরক্ষিত আছে এই স্মৃতি শৈলের অন্দরে সেটা না দেখলে বোঝানো মুশকিল। এই সংগ্ৰহ শালা সত্যি দেখার মত। দরবার হলের ঠিক উল্টোদিকে হলো কোলকাতা গ্যালারি যেখানে রয়েছে বাংলার সব বিখ্যাত মানুষের ছবি, তাদের নিজেদের হাতে লেখা অনেক তথ্য, তাদের জীবন, রয়েছে বাংলা প্রথম হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের মূর্তি, ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল দত্ত যাঁকে কোলকাতার ফাদার ওফ হোমিওপ্যাথি ও বলা হয়ে থাকে। তাছাড়াও রয়েছে হাতির দাঁতের তৈরি চেয়ার যেটি মীর জাফারের স্ত্রী মুন্নী বেগম উপহার দিয়েছিলেন হেস্টিংসের স্ত্রীকে। রয়েছে ১৮৯১ সালের কাঁথা যেটার ওপর সুতোর কাজ এত নিঁখুত যে এখনকার দিনে মেশিনে করলেও এত ভাল করে করতে পারবে না। এছাড়াও আছে সত্যেন্দ্র প্রসন্ন সিনহার পরিহিত কোট যার মধ্যে রয়েছে সোনার অসম্ভব সুন্দর কাজ। এই সংগ্ৰহ শালা দেখতে দেখতে সারাদিন কাটানো যায়।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সেন্ট্রাল হলে রাণীর মূর্তি তো আছেই তার সাথে ওপরে তাকালে দেখতে পাবেন অনেক ছবি। রাণীর শৈশব কাল, তাঁর সাথে প্রিন্স এলবার্টের বিবাহ, রাজকীয় পরিবারের জীবনযাপন, এডওয়ার্ড সিক্স এবং প্রিন্সেস আলেকজান্ডারের বিবাহ এসবের ছবিতে বলা আছে। ভিক্টোরিয়ার সংগ্ৰহশালায় যেসব তৈলচিত্র টাঙানো আছে সেগুলো সব ই ১৭৭০ থেকে ১৮৩৫ এর মধ্যে তৈরী হয়েছে। ভু দৃশ্য ও শহরের দৃশ্যের যে চিত্র গুলো আছে ওগুলো সরকার উলিয়াম ও থমাস ডেনিয়েলের তৈরী। প্রতি কৃতি, পোট্রেট এবং ঐতিহাসিক দৃশ্যে র যে চিত্র গুলো সব টিটি কেটেল নামক এক ইংরেজের তৈরী। এই শৈল স্মৃতি র বাইরে যে সবুজে ঘেরা বাগান আছে সেটা প্রায় ৬৪ একর জমির ওপর করা হয়েছে। ২১টি মালি এই বাগানগুলোর পরিচর্যা করে। রিডেলসল ও ডেভিড নামক দুই ইংরেজ এই বা বাগানগুলোর নকসা করেছেন। এই বাগানের চারিধারে কিছু মূর্তি দেখতে পাওয়া যাবে যেগুলো হল চার্লস কর্ন ওয়ালিস, জেমস ব্রাউন রামসে, আর্থার ওয়েলেসলি র।
ভিক্টোরিয়া র বাইরে টাও যেমন সুন্দর ভেতরের সংগ্ৰহ শালা ততধিক আকর্ষণীয়। তাই আমাদের সবার ই দ্বায়িত্ব এই স্মৃতি শৈলকে সারাজীবন এভাবেই সুন্দরভাবে কোলকাতার ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখতে।
0 Comments:
Post a Comment